ঢাকা , বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫ , ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
একটি দল সম্পর্কে লিখছেন না, সাংবাদিকদের মির্জা আব্বাস আবারও শাহরুখ-মাধুরী জুটিকে দেখতে চায় দর্শক! সমালোচনার জবাব দিলেন প্যারিস জ্যাকসন মারা গেলেন ব্রিটিশ তারকা সাইমন ফিশার ইন্ডাস্ট্রিকে থেকে তারা আমাকে সরিয়ে দিতে চেয়েছিল : গোবিন্দ ইফতারে যোগ দিয়ে তোপের মুখে বিজয় এবার ভারতীয় সিনেমায় দেখা যাবে হানিয়া আমিরকে ভারতের ফিল্মফেয়ারে মনোনীত হলেন বাংলাদেশি তিন তারকা ওমরাহ হজ পালন করতে মক্কায় বর্ষা উত্তোলন করা হলো তানজিন তিশার সহকারীর লাশ শ্রীপুরে তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রীকে ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ, যুবক আটক অংশগ্রহণমূলক ভোটের পরিবেশ সৃষ্টিতে সহায়তা করতে চায় যুক্তরাজ্য রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত চেয়েছে ঐকমত্য কমিশন আসামিদের পক্ষে দাঁড়াবেন না আইনজীবীরা মধ্যরাতে আদালতে চার আসামি রিমান্ড মঞ্জুর পাচারকৃত টাকা ফেরাতে আগামী সপ্তাহে নতুন আইন -প্রেস সচিব সাবেক ৬৪ সচিবের তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে যাচাই করবে সরকার চোখের পাতা নেড়েছে সেই শিশুটি নিরাপত্তায় কঠোর হচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার করারোপের আগে বাজার প্রভাব বিশ্লেষণ চান ব্যবসায়ীরা

ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ছাত্র-জনতার ব্যাপক ভাঙচুর

  • আপলোড সময় : ০৬-০২-২০২৫ ০১:২৪:৩৪ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৬-০২-২০২৫ ০১:২৪:৩৪ অপরাহ্ন
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ছাত্র-জনতার ব্যাপক ভাঙচুর
দিল্লিতে বসে ছাত্র-জনতার উদ্দেশে শেখ হাসিনার ভাষণের প্রতিবাদে গতকাল রাতে ‘মার্চ টু ধানমন্ডি ৩২’ নামে একটি কর্মসূচি পালন করেছে ছাত্র-জনতা। পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ছাত্র-জনতার ঢল নেমেছে। এ সময় আগুন দিয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ি ব্যাপক ভাঙ্চুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বুধবার রাত ৮টার দিকে তারা স্লোগান দিতে দিতে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের গেট ভেঙে ঢুকে পড়েন। সরেজমিনে দেখা যায়, গতকাল বুধবার সন্ধ্যার আগ থেকেই ছাত্র-জনতা ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের আশপাশে জড়ো হতে থাকে। পরে রাত ৮টার দিকে ঢল নামে। এক পর্যায়ে তারা স্লোগান দিতে দিতে সড়কের গেট ভেঙে প্রবেশ করে। পরে সেখানে থাকা তিনতলা বাড়িটির দরজা ভেঙে ছাত্র-জনতা ভেতরে প্রবেশ করে। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ওই বাড়িতে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতার ভাঙচুর চলছিল। এ সময় জ্বালো জ্বালো, আগুন জ্বালো; দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা; অ্যাকশন অ্যাকশন ডাইরেক্ট অ্যাকশন, শেখ হাসিনার বিচার চাই-, ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও, ফ্যাসিবাদের আস্তানা-ইত্যাদি স্লোগান দেয় বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। মূলত নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের ভার্চ্যুয়াল অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে ছাত্রসমাজের উদ্দেশে গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণ দেয়ার প্রতিবাদে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। ‘উৎসব হোক’ কীসের ইঙ্গিত দিলেন আসিফ মাহমুদ: এরআগে গতকাল বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ৮ মিনিটের দিকে ‘উৎসব হোক!’ লিখে হঠাৎ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। এরপরই নেটিজেনরা সেই পোস্টে বিভিন্ন মন্তব্য করতে থাকেন। অনেকেই কৌতূহলী হয়ে জানতে এ পোস্টের মধ্যদিয়ে কীসের ইঙ্গিত দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের এ নেতা। মূলত চব্বিশের বিপ্লবী ছাত্রজনতার উদ্যোগে গতকাল বুধবার রাত ৯টায় ধানমন্ডি-৩২ অভিমুখে বুলডোজার মিছিল কর্মসূচির ঘোষণা দেয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে লেখালেখি করছেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতারা। এ তালিকা থেকে বাদ যাননি হাসনাত আবদুল্লাহ, নুসরাত তাবাসসুমরাও। ধারণা করা হচ্ছে, বুলডোজার মিছিল ইস্যুকে কেন্দ্র করে এ পোস্ট দিয়েছেন আসিফ মাহমুদ। ফেসবুকে স্ট্যাটাসে হাসনাত আবদুল্লাহ লেখেন, গতকাল বুধবার রাতে বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদের তীর্থভূমি মুক্ত হবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক নুসরাত তাবাসসুম বলেন, ৩২ এর সাথে সাথে সমাধি সৌধটাও হিসেবে রাখবেন আর কি মাথায়! ছয় মাসে একটা, এক বছরে আরেকটা। মুখ খুললেই বুলডোজার। অপরদিকে জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যদেরও এ সংক্রান্ত পোস্ট দিতে দেখা যায়। কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ এক পোস্টে লেখেন, গতকাল বুধবার জুলাই অভ্যুত্থানের ছয় মাস পূর্ণ হলো। এই ঐতিহাসিক দিনে বঙ্গের কসাই হাসিনা প্রকাশ্যে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কী দিনটাই না বেছে নিল! এখন আমাদের আবার জাগবার সময়। আসুন, এ ঐতিহাসিক দিনে সব ফ্যাসিবাদী উপাদান নির্মূল করি। হাসনাত আব্দুল্লাহ লিখলেন, ফ্যাসিবাদের তীর্থভূমি মুক্ত হবে বাংলাদেশ : রাতে বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদের তীর্থভূমি মুক্ত হবে বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজ ভেরিফায়েড আইডিতে দেয়া এক পোস্টে এ কথা বলেন তিনি। ফেসবুকে স্ট্যাটাসে হাসনাত আবদুল্লাহ লেখেন, আজ রাতে বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদের তীর্থভূমি মুক্ত হবে। যদিও স্ট্যাটাসে বিস্তারিত কিছুই উল্লেখ করেননি তিনি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, ছাত্র-জনতাকে নিয়ে ধানমন্ডি-৩২ নম্বরের শেখ হাসিনার পৈতৃক বাড়ি গুঁড়িয়ে দেয়া হতে পারে। এর আগে হাজারো ছাত্র-জনতার ওপর গণহত্যা চালিয়ে দিল্লি পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। সেখান থেকেই শেখ হাসিনা বাংলাদেশ বিরোধী অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। এর প্রতিবাদে চব্বিশের বিপ্লবী ছাত্র-জনতার উদ্যোগে বুধবার রাত ৯টায় ধানমন্ডি-৩২ অভিমুখে বুলডোজার মিছিল কর্মসূচির ঘোষণা দেয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে লেখালেখি করছেন জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতারা। ধানমন্ডি-৩২ নম্বরে লাখ লাখ মানুষকে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিদেশে অবস্থানরত লেখক ও অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্য। নিজের ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, কাডাল রাণি লাইভে যাবে যখন, তখন সবাই যান ৩২ নম্বরে। বাকি কাম সাইরা আইসেন এইবার। লাখে লাখে মানুষ আসেন ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে। আওয়াজ তোলেন, থাকবে না, ৩২ নম্বর থাকবে না। আরেক পোস্টে তিনি লেখেন, হাতুড়ি, শাবল, গাইতি নিয়ে আসুন। ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে আসুন। ইতিহাসের দায় মোচন করতে আসুন। ফ্যাসিবাদের আতুড়ঘর নিশ্চিহ্ন করতে আসুন। গান গাইতে গাইতে আসুন, স্লোগান দিতে দিতে আসুন, সন্তানের হাত ধরে আসুন, প্রেমিক প্রেমিকাকে সাথে নিয়ে আসুন, মুখে হাসি আর বুকে প্রতিরোধের আগুন নিয়ে আসুন। তিনি আরও লেখেন, ফ্যাসিবাদের ধ্বংসস্তূপের ওপরে ছাত্র জনতার বিজয় নিশান ওড়াতে আসুন। আজ রাত ৯টায়। ইতিহাস রচিত হোক। আবু সাঈদ, মুগ্ধরাও আসবে আপনাদের দেখানো পথে। আসুন অসমাপ্ত কাজ আজ আমরা সম্পন্ন করি। ইতিহাসের দায় মোচন করি। ‘ধানমন্ডি-৩২ অভিমুখে বুলডোজার মিছিল’-শিরোনামে একটি পোস্টার ফেসবুকে পোস্ট করে বিদেশে অবস্থানরত সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন লেখেন, আপার বক্তব্যের তালে তালে বুলডোজার চলবে। গতকাল বুধবার রাত ৯টায়। লেখক ও অ্যাকটিভিস্ট ফাহাম আবদুস সালাম ফেসবুক পোস্টে লেখেন, শেখ হাসিনা যদি কোনোদিন পাবলিক অ্যাড্রেস করে - অ্যান্টি ফ্যাসিস্টদের সরাসরি ঘোষণা দেয়া উচিত যে-আমরা টুঙ্গিপাড়া কবরসৌধ বুলডোজ করে পুরোপুরি মাটির সঙ্গে মিলিয়ে দেব। সরকারের কোনো বাধা দেয়া উচিত না। আমরা বাংলাদেশের সব বুলডোজার টুঙ্গিপাড়া নিয়ে যাব। সারা জীবনে কোনোদিন যদি পাবলিক অ্যাড্রেস করে - এইটা হবে পরিণতি। প্রসঙ্গত, ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের ১০ নম্বর বাড়ি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নিহত হওয়ার আগ পর্যন্ত এ বাড়িতেই থাকতেন শেখ হাসিনার বাবা শেখ মুজিবুর রহমান। বাড়িটি পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে রূপান্তরিত করা হয়। শেখ হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কর্মসূচি শুরু হতো ৩২ নম্বরে শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে। এমনকি হাসিনার অনুগত অনেক সরকারি আমলাও এখানে শ্রদ্ধা নিবেদন করে তাদের কার্যক্রম শুরু করতেন।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স